শেখ ফরিদ আহমেদ :
২০২৫ সালের জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলার সাড়ে তিন লক্ষ শিশু-কিশোরকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হবে, সারা দেশের ন্যায় গোপালগঞ্জেও শুরু হয়েছে “টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন–২০২৫”, যা সরকারের জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।
রোববার (১২ অক্টোবর) সকালে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন স্কুল ও কলেজ প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্মসচিব) মুহম্মদ কামরুজ্জামান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক নিজ হাতে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান করে এ কার্যক্রমের সূচনা করেন।
তিনি বলেন,“টাইফয়েড একটি প্রাণঘাতী ব্যাধি। শিশুদের সুস্থ জীবন নিশ্চিত করতে এ টিকাদান কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের এই মহতী উদ্যোগ সফল করতে অভিভাবক, শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রশাসনের সমন্বিত ভূমিকা অপরিহার্য।”
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলার পাঁচটি উপজেলা ও পৌর এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি ক্লিনিক, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও নির্ধারিত টিকাদান কেন্দ্রে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ শিশু, কিশোর-কিশোরীকে বিনামূল্যে টাইফয়েড প্রতিষেধক টিকা প্রদান করা হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান, জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আবু সাঈদ মো. ফারুক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খোন্দকার রুহুল আমিন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোসাঃ জ্যোৎস্না খাতুন, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাঃ দিবাকর বিশ্বাস, সহকারী কমিশনার মোঃ আতাউর রহমান, এস এস আমিরুল মোস্তফা, গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন স্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা ও স্বাস্থ্যকর্মীবৃন্দ।
উদ্বোধনী দিন সকাল থেকেই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। অভিভাবকরা সন্তানের হাত ধরে টিকাকেন্দ্রে উপস্থিত হন। স্বাস্থ্যকর্মীরা অত্যন্ত আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা “সুস্থ থাকব, টাইফয়েডকে রুখব” শ্লোগানধ্বনিতে মুখর করে তোলে অনুষ্ঠানস্থল। জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আবু সাঈদ মো. ফারুক বলেন, “টাইফয়েড প্রতিরোধে এই টিকা ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশু ও কিশোরদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর। এর মাধ্যমে জেলাজুড়ে টাইফয়েড সংক্রমণ অনেকাংশে কমে আসবে বলে আমরা আশাবাদী।”
উল্লেখ্য, টিকা প্রদানের এ কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গত ৮ অক্টোবর গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এবং ৯ অক্টোবর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষক প্রতিনিধি, স্বাস্থ্যকর্মী ও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে একাধিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী কয়েক সপ্তাহ ধরে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ধারাবাহিকভাবে এ টিকাদান কর্মসূচি পরিচালিত হবে, যাতে কোনো শিশুই টিকার আওতার বাইরে না থাক।
Leave a Reply