রাজিয়া সুলতানাঃ
গোপালগঞ্জ পৌরসভায় অবৈধ পানির লাইন থাকার অভিযোগ রয়েছে। বেশকিছু এলাকায় পৌরসভা থেকে পানি সরবরাহ করা হলেও, কিছু লোক অবৈধ সংযোগ ব্যবহার করে পানি উত্তোলন করছে, যা বৈধ সংযোগ ব্যবহার কারীদের জন্য সমস্যা তৈরি করছে । অবৈধ সংযোগের কারণে পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। এর সাথে পৌরসভার পানির লাইনের লোকজন সরাসরি জড়িত। টাকার বিনিময়ে পানির অবৈধ সংযোগ দিচ্ছে। এদিকে পৌরসভার পুরনো শোধনাগারের সক্ষমতা কমে যাওয়ায় নতুন ওয়ার্ডগুলোতে পাইপলাইন ও পাচ্ছেন না গোপালগঞ্জ পৌরবাসী। তাই অনেকে পৌরসভার কিছু লোককে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে পানির সংযোগ নিয়ে বাড়ি ঘর স্থাপন করছে।
বিকল হতে বসেছে গোপালগঞ্জ পৌরসভার ২৫ বছরের পুরাতন পানি শোধনাগার। যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে পানি সরবরাহ। শোধনাগারের বেহাল দশার কারণে চাহিদার ৪ ভাগের এক ভাগ পানি সরবরাহ করতে হিমসীম খাচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষ।
পৌরসভার আয়তন বাড়লেও নতুন করে ১ মিটার পাইপলাইন নেটওয়ার্কও স্থাপনকরা সম্ভব হয়নি। নিয়মিত বিল পরিশোধ করলেও ঠিকমত পানি না পাওয়ায় পুরাতন গ্রাহকরাও পড়ছে পানির সংকটে।
পানি সরবরাহ কর্তৃপক্ষ জানায়, বিপুল চাহিদা থাকলেও সার্ফেসওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের বেহাল দশার কারণে তা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। ৩টি ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও ৬ টি ওভারহেডট্যাংক থাকলেও দিনদিন সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। প্রথম শ্রেণীর পৌরসভাটিতে বর্তমানে পানির গ্রাহক রয়েছে ১০ হাজার ১৪৯ জন। ৩০.৭০ বর্গ কিলোমিটারের এ পৌরসভাটিতে প্রতিদিন পানির চাহিদা রয়েছে ৬০ মিলিয়ন লিটার। কিন্ত সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে মাত্র ১৫ মিলিয়ন লিটার। ১৩.৮২ বর্গ কিলোমিটারের পৌরসভাটিকে ২০২১ সালে আরো বর্ধিতকরা হয় ১৬.৮৮ বর্গ কিলোমিটার। পরিধি বাড়লেও ৪ বছরে নতুন কোন লাইন নেটওয়ার্কও স্থাপনকরা সম্ভব হয়নি। ৯টি হাইলিফট পাম্পের মধ্যে ১টি নষ্ট দীর্ঘদিন ধরে। বাকী পাম্পগুলোরও করুণ দশা। প্রায়শয়ই ঘটছে ছোট ত্রুটি। এতে পুরাতন গ্রাহকদেরকেই চাহিদামতো পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছেনা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহক কর্তৃপক্ষ উভয়েই।
পৌর পানি সরবরাহ শাখার ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী সরুপ বোস বলেন, ‘পৌরসভা ১৫ টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এখানে পানির চাহিদা রয়েছে প্রতিদিন ৬০ মিলিয়ন লিটার। পানি সরবরাহ করতে পারি প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ মিলিয়ন লিটার। শোধনাগারের সক্ষমতা অনুযায়ী আমরা ২৪ ঘন্টা পানি সরবরাহ করি। চাহিদার তুলনায় পানি শোধনের সক্ষমতা না থাকায় মুলত এই পানির সংকট দেখা দিয়েছে। নতুন ওয়ার্ডে নতুন কোন পাইপলাইন বসানো হয়নি কারন পুরাতন লাইনগুলোতে পানি দেওয়ার যে শোধনাগার রয়েছে তার মেয়াদ দীর্ঘ বছর হয়ে যাওয়ায় সেটির সক্ষমতা কমে গেছে। নতুন শোধনাগার তৈরি নাহলে বর্ধিত এলাকাগুলোতে পাইপলাইন সংযোগ স্থাপন করে কোন ফলাফল পাওয়া যাবে না।
গোপালগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, পানির যে সংকট রয়েছে সেটি নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে এই সমস্যা সমাধানের জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করে ডিপিপি আকারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আমরা আশাবাদি দ্রুতই প্রকল্পটি অনুমোদন পাবে।’আর অবৈধ পানির সংযোগের সন্ধান পেলে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply